মুরগি পালন করে সফলতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

0
7636
মুরগি পালন

সাধারনত মুরগির খামার অনেকেই করে কিন্তু লাভের দেখা মেলে কত জনের এই প্রশ্নটা থেকেই যায়। বর্তমান সময়ে মুরগির খামার এর কথা ভাবতেই মানুষের মনে একটি শব্দ চলেই আসে “RISK” । অথচ দিনাজপুর জেলার মুন্না মিয়া  মুরগির খামার করে সফলতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। তিনি এই ব্যবসায় একশত  মুরগি দিয়ে শুরু করে আজ চারটি খামার এর মালিক। তার মতে পরিশ্রম, কাজের প্রতি শ্রদ্ধা ও পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই লাভের অংশটুকু পকেটে তোলা সম্ভব। তার এইসব খামারে দুই ধরনের মুরগি পালন করা হয়ে থাকে ব্রয়লার ও লেয়ার ।মুরগির ব্যবসায় আমরা দুই ধরনের সমস্যায় পরতে পারি।

প্রথমত, “রোগ” যদি খামার এর মুরগি রোগে আক্রান্ত হয় তবে সেই খামার থেকে লাভ করাটা অসম্ভব হয়ে যায়। কারণ মুরগির যে কোন রোগ খুবই মারাত্বক আর এই জন্য মুরগির যে কোন রোগ প্রতিকার করার থেকে প্রতিরোধ করাই উত্তম। তাই মুরগির সঠিক ব্যবস্থাপনার সাথে সাথে মুরগির বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক টিকা দেওয়া মুরগি পালন এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যেমন:

ব্রয়লার মুরগির টিকা: মারেক্স, রানীক্ষেত, গামরোরো টিকা।

লেয়ার মুরগির টিকা: মারেক্স, রানীক্ষেত, গামরোরো, ব্রংকাইটিস, বসন্ত, সালমোনেলা, করাইজা টিকা।

মুরগি পালন করে সফলতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত
চিত্র: মুন্না মিয়ার খামারের সাইন বোর্ড

দ্বিতীয়ত, “বাজার পরে যাওয়া বা দাম কমে যাওয়া” এই বিষয়টি মূলত পরিকল্পনার ওপর নির্ভর করে খামারি কোন সময় মুরগি বাজারজাত করবে এবং এই সময় মুরগির চাহিদা কেমন থাকবে তার ওপর নির্ভর করে ।

ব্রয়লার মুরগি : ব্রয়লার হলো মুরগির মাংস উৎপাদনের জন্য এক বিশেষ ধরনের মুরগি যাদের দেহের ওজন ৩০ থেকে ৩৫ দিনে দেড় থেকে পৌনে দু’কেজি হয়। ঐ সময়ে এরা এক কেজি দেহের ওজনের জন্য মোটামুটিভাবে দেড় কেজি খাবার খাবে। এদের মাংস খুব নরম ও সুস্বাদু।

লেয়ার মুরগি: লেয়ার মুরগি হলো ডিম উৎপাদনের জন্য বিশেষ ধরনের মুরগি যাদেরকে একদিন বয়স থেকে পালন করা হয়, যারা ১৮ থেকে ১৯ সপ্তাহ বয়সে ডিম দিতে শুরু করে এবং উৎপাদনকাল ৭২ থেকে ৭৮ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

খামার লাভজনক করণীয় ব্যবস্থাপনা:

  • সঠিক জাত নির্বাচন ও গুণগতমানের ব্রয়লার বাচ্চা সংগ্রহ করা
  • ঘরের গুণাগুণ,ঘরের স্থান নির্বাচন,মুরগির ঘরের পরিবেশ সঠিক ভাবে রাখতে হবে
  • খাদ্য ব্যবস্থাপনা,পানি ব্যবস্থাপনা,আলোক ব্যবস্থাপনা সঠিক ভাবে রাখতে হবে
  • সময়মত টিকা প্রদান কর্মসূচি অনুসারে বিভিন্ন রোগের টিকা প্রদান করা
  • পানির পাত্র,খাবার পাত্র,মুরগি ধরার সরঞ্জাম পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে
  • লিটার পরিষ্কার ও পরিচর্যার ব্যবস্থা করতে হবে
  • ঘরে অনুকূল তাপমাত্রা রাখতে হবে
  • সুষ্ঠু বাজারজাতকরণ ও বাজার চাহিদানুসারে উৎপাদন ব্যবস্থা গ্রহণ করা
  • খামারের আয় ব্যয়ের হিসাব সংরক্ষণ ও পর্যালোচনা করা।

বিস্তারিত তথ্যের জন্য সফল খামারীর সাথে থাকুন।