রেসওয়ে কালচার পদ্ধতিতে মাছ চাষে সজীব চন্দ্র তালুকদারের সফলতা !!

0
4994
রেসওয়ে কালচার পদ্ধতিতে মাছ চাষে সজীব চন্দ্র তালুকদারের সফলতা !!

রেসওয়ে কালচার পদ্ধতিতে ট্যাংকে মাছ চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার শিক্ষিত যুবক সজীব চন্দ্র তালুকদার। একজন শিক্ষিত আধুনিক স্বাধীন চেতা যুবক, তিনি প্রথমে ময়মনসিংহের আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে গণিত বিষয়ে শিক্ষা শেষ করে। বাংলাদেশ প্রকৌশল অধিদপ্তরে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু চাকরিতে তিনি মন বসাতে পারেননি। আর তাই তিনি চকরি ছেড়ে দিয়ে গ্রামে স্বাধীন কোনো ব্যবসা করার কথা ভাবেন। শুরুতেই স্বল্প পুঁজি নিয়ে ব্যবসা করার জন্য সিদ্ধান্ত নেন এবং সবসময় তিনি ইন্টারনেটে চোখ রাখতেন যদি নতুন কিছু করা যায়।

এর মধ্যেই তিনি ইন্টারনেটে রেসওয়ে কালচার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারেন। তিনি জানতে পারলেন যে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে অল্প পরিমাণ জায়গায় মাছ চাষ করে অধিক লাভবান হওয়া যায়। তাই তিনি বিলম্ব না করে ছুটে যান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্যুয়া কালচার বিভাগের প্রধান ড. মাহফুজুল হক রিপনের কাছে। তিনি সজীব চন্দ্র তালুকদারকে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার জন্য উৎসাহ দেন এবং সকল প্রকার কারিগরি সহায়তা প্রদান করেন।

রেসওয়ে কালচার
চিত্র: ট্যাংকে মাছ চাষ

এই পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি জানান, আমি এই বছরের ২৪ এপ্রিল আমার বাড়ির আঙ্গিনায় ১২০ বর্গফুটের একটি ট্যাংকে ছোট আকারে গবেষণামূলক প্রতিটি .২০ গ্রাম ওজনের ২৫ হাজার (প্রতি কেজিতে ৫ হাজার পোনা) শিং মাছের পোনা ছেড়ে দেই। এর পর রেসওয়ে কালচার পদ্ধতি অনুসরণ করে মাছ চাষে সহায়তা করতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্যুয়া কালচার বিভাগ আমাকে সকল প্রকার পরামর্শ প্রদান করেছে। এর প্রথম সফলতা স্বরুপ আমি দেখতে পেলাম  ১৬ গ্রাম ওজনের (৬০টি শিং মাছে ১ কেজি) হয়েছে। আর চার মাসের মধ্যেই ২৫টি মাছে ১ কেজি হলে ১ হাজার কেই শিং মাছ বাজারে বিক্রয় করতে পারব।

তিনি আরো জানান, এই পরিমাণ মাছ চাষ করতে ৫০ শতাংশ জমির প্রয়োজন কিন্তু এই পদ্ধতিতে স্বল্প পরিমাণ জায়গায় অধিক মাছ চাষ করা যায়, বছরের ১২ মাসে চাষ করা সম্ভব। এতে মাছের খাবারের জন্য বিভিন্ন কোম্পানির ফিড খাওয়ালেই হয়,মাছের বৃদ্ধি খুব দ্রুত হয়, পানি পরিষ্কার থাকে, খরচও খুব কম। তিনি আরো জানান এই পদ্ধতিতে প্রথম বছর ১ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ৩ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করা সম্ভব এবং পরবর্তী বছরে লাভ আরো বেশি হবে।

রেসওয়ে কালচার পদ্ধতি সম্পর্কে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্যুয়া কালচার বিভাগের প্রধান ড. মাহফুজুল হক রিপন জানান, এই পদ্ধতি একটি সেরা পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে স্বল্প জায়গায় পুকুরের তুলনায় ৩০ গুণ বেশি মাছের উৎপাদন করা সম্ভব। এ পদ্ধতি যদি বাংলাদেশ ছড়িয়ে দেয়া যায় তাহলে দেশে মৎস্য চাষে বিপ্লব আনা সম্ভব এবং দেশের শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা কমানো যাবে।